চাঁদাবাজী মামলার আসামীসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে বিএনপি নেত্রীর লিফলেট বিতরণ

ধামরাই( ঢাকা) প্রতিনিধি:

চাঁদাবাজী মামলার আসামীসহ আওয়ামী লীগের একাধিক লোকজন নিয়ে ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের এমপি সুলতানা আহমেদ। অভিযোগ রয়েছে সূয়াপুর ইউনিয়নের আবু তালেব ও আমিনুর ইসলাম ছিলেন আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী।  যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগের সময়কালে সবেক দুই এমপি বেনজির আহমেদ ও এমএ মালেকের সাথেও ছিলো সুসম্পর্ক। রয়েছে একাধিক ছবিও। এছাড়াও সম্প্রতি চাঁদাবাজির মামলায় জামিনে আসা এক ইউপি সদস্যও ছিলেন বিএনপি নেত্রীর এই গণসংযোগে। চাঁদাবাজির মামলার আসামিসহ আওয়ামী লীগের এসব লোকজন নিয়ে বিএনপি নেত্রীর গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা সমালোচনা।

স্থানীয় বিএনপির ত্যাগী নেতা ও স্থানীয়রা বলছেন, আবু তালেব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। তিনি সূয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতাদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন এই নেত্রী। ফ্যাসীবাদী সরকারের পতনের পর স্বার্থান্বেসী আওয়ামী লীগের কতিপয় লোকজনসহ চাঁদাবাজী মামলার আসামীরা আবার বিএনপির ছায়াতলে বসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এদের জন্যই বিএনপি দলের বদনাম হচ্ছে বা হবে।

গতকাল শুক্রবার (২৫ আগষ্ট)  বিকেলে উপজেলার সূয়াপুর ইউনিয়নের রাজনগর, ঈশাননগর ও সূয়াপুর বাজারে আওয়ামী লীগের লোকজনকে নিয়ে গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ ও উঠান বৈঠক করেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সুলতানা আহমেদ।

এসময় আওয়ামী লীগের নেতা আবু তালেব, সূয়াপুর  ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তারু মেম্বারের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম ও চাঁদাবাজী মামলার ২ নম্বর আসামী মোতালেব মেম্বারকে সুলতানা আহমেদ এর সাথে দেখা যায়।

এবিষয়ে জানতে চাইলে আবু তালেব বলেন আমি আওয়ামী লীগ করিনি। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সাবেক দুই এমপির সাথে আপনার একাধিক ছবি রয়েছে এবিষয়ে আপনি কি বলবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান সোহরাব আমার বন্ধু। তার সুবাদে আমাকে সকল অনুষ্ঠানে যেতে হয়েছে। তবে আমি আওয়ামী লীগের  কোন পদে ছিলাম না। আমি পূর্বে থেকেই বিএনপি করি।

কিন্তু সূয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য শামসুল হক বলেন, আবু তালেব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন।

সূয়াপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তারু মেম্বারের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম আওয়ামী লীগের স্বক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি বলেন,  আমার বাবা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন কিন্তু আমি কোন পদে ছিলাম না। সূয়াপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কফিল উদ্দিন এর নির্বাচন করেছি শুধু। তাছাড়া আমি বিএনপি করি। তবে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাঁটিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা বানিজ্য করে গেছেন আবু তালেব ও আমিনুল ইসলামরা।

লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে আওয়ামীলের নেতাকর্মী উপস্থিত থাকার বিষয়ে ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সহ- সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর ইসলাম শাহিন বলেন, আমরা কাউকে ইনভাইট করি নি। কেউ যদি এসে সামনে দাড়ায় কি করবো, তাদের দিয়ে কোন বক্তব্য দেওয়া হয় নি। আমরা বিএনপির লোকজন নিয়ে গণসংযোগ করেছি।

বিএনপির ৩১ দফা দাবিতে লিফলেট বিতরণ কালে আওয়ামী লীগ ও চাঁদাবাজি মামলার আসামী ছিলেন এমন বিষয়টি অস্বীকার করেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সুলতানা আহমেদ। তিনি বলেন, আমি কাউকে চিনি না, যদি এসব লোক এসে থাকে তাহলে সব শাহিন জানে। শাহিন কাকে দাওয়াত দিয়েছে তা আমি জানি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *